সংস্কৃতির মাধ্যমে সুদৃঢ় হচ্ছে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক: রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ ও চীন শুধু বাণিজ্য ও সংযোগে নয়, জনগণের হৃদয়ের বন্ধনে যুক্ত হয়ে একসঙ্গে এগিয়ে চলেছে। এই যাত্রায় সাংস্কৃতিক কূটনীতির ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার জাতীয় জাদুঘরে ‘রেডিয়েন্ট স্টারস: লিংজিয়াতান কালচার ফটো এক্সিবিশন ফ্রম আনহুই, চায়না’ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিল্পকলা, সাহিত্য, সংগীত, প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর বিনিময়ের মধ্য দিয়ে শুধু নিদর্শন নয়, বরং আদর্শ, দৃষ্টিভঙ্গি ও জীবনদর্শনও ভাগাভাগি হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এ ধরনের প্রদর্শনীকে তিনি ‘সভ্যতার মধ্যে সংলাপ ও বন্ধুত্বের উৎসব’ হিসেবে অভিহিত করেন।
বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর এবং ‘ইয়ার অব পিপল-টু-পিপল এক্সচেঞ্জেস’ উপলক্ষে আয়োজিত এ প্রদর্শনী সম্পর্কেও তিনি বলেন, এ সম্পর্ক সবসময় বাণিজ্য ও অবকাঠামোর গণ্ডি ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, চীনা সংস্কৃতি আমাদের স্থাপত্য, বৌদ্ধ ঐতিহ্য ও শিল্পচর্চায় প্রভাব ফেলেছে। অপরদিকে বাংলাদেশের হস্তশিল্প, সংগীত ও সাহিত্যও চীনে দীর্ঘদিন ধরে সমাদৃত হয়ে আসছে।
উপদেষ্টা লিংজিয়াতানের জেড শিল্পকর্মকে মানুষ ও প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য এবং আধ্যাত্মিক ভারসাম্যের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি মহাস্থানগড়, উয়ারি-বটেশ্বর ও পাহাড়পুরের মতো বাংলাদেশের প্রাচীন নিদর্শনের সঙ্গে এই শিল্পকর্মের মিল খুঁজে পান এবং বলেন, প্রদর্শনীটি বাংলাদেশের সভ্যতার ধারাবাহিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, এমনকি সমকালীন জলবায়ু চ্যালেঞ্জ নিয়েও চিন্তা উসকে দেয়।
তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও চীনের আনহুই মিউজিয়ামের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারককে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এর মাধ্যমে যৌথ প্রদর্শনী, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও একাডেমিক সহযোগিতা আরও শক্তিশালী হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আনহুই প্রদেশের পক্ষ থেকে দেওয়া ব্রোঞ্জ প্রতিলিপি ও “ফোর ট্রেজারস অব দ্য স্টাডি” উপহারের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় জাদুঘরের স্থায়ী ‘চায়না কর্নার’-এ এটি বন্ধুত্বের প্রতীক হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চীনের আনহুই প্রদেশের ভাইস গভর্নর সান ইয়ং, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান, বাংলাদেশ-চীন কালচারাল ইকোনমিক অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন সেন্টারের সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর লি শাওপেংসহ কিউরেটর, কর্মকর্তাবৃন্দ ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।
পরে উপদেষ্টা জাতীয় জাদুঘরের ‘চায়না কর্নার’ ও প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন। প্রদর্শনীটি ২৫ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।