ওডিশায় ৪৪৪ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা আটক!
ভারতের ওডিশা রাজ্যের ঝাড়সুগুড়া জেলায় অভিযান চালিয়ে ৪৪৪ জন অবৈধ অভিবাসী সন্দেহে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আটক ব্যক্তিদের পরিচয় নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
অভিযান পরিচালনা করেন ঝাড়সুগুড়ার পুলিশ সুপার স্মিত পিস পারমার। পুলিশের দাবি, এদের কারও কাছেই বৈধ পরিচয়পত্র বা ভিসা ছিল না। তাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করে এই অভিযান চালানো হয়।
আটকদের মধ্যে ২৬৫ জনকে ব্রজ রাজনগর মহকুমা সুরভি কল্যাণ মণ্ডপে রাখা হয়েছে, বাকি ১৭৯ জনকে রাখা হয়েছে ব্ল্যাক ডায়মন্ড কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির হোল্ডিংস সেন্টারে। এদের মধ্যে অনেকে রাজমিস্ত্রি, শ্রমিক ও ফেরিওয়ালা হিসেবে কাজ করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, যাদের বৈধ নথি নেই, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে নির্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তবে এই ঘটনায় প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদসদস্য মহুয়া মৈত্র। তার দাবি, আটক হওয়া ৪৪৪ জনের মধ্যে ২৩ জন তার লোকসভা কেন্দ্রের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘ওড়িয়া আমাদের রাজ্য থেকে কাজ করতে যাওয়া অনেক মানুষ অহেতুক পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন, যা ভারতের সংবিধান অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।’
তিনি আরও জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এই ইস্যুতে ওডিশার মুখ্যসচিব মনোজ আহজারের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দ্রুত আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করা হয়েছে।
মহুয়া মৈত্র প্রশ্ন তোলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে তো ১ কোটি ৩০ লাখের মতো অন্য রাজ্যের মানুষ কাজ করছেন। আমরা তো তাদের এমনভাবে কখনো আটক করিনি।’
এদিকে ঝাড়সুগুড়ার পুলিশ সুপার জানান, তারা কেবল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছেন এবং প্রতিটি জেলায় বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন একজন করে বিদেশি রেজিস্ট্রেশন অফিসার।
এই ঘটনা ঘিরে একদিকে অনুপ্রবেশ ঠ্যাকানোর সরকারি উদ্যোগ, অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ নাগরিক অধিকার রক্ষার প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ভারত জুড়ে।



























