রোববার, ১০ আগস্ট ২০২৫

|২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

সদ্য সংবাদ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ৭ জুলাই ২০২৫

আপডেট: ১৯:৩৮, ৭ জুলাই ২০২৫

কানাডা ছাড়ছে হাজারো মানুষ, কিন্তু কেন?

কানাডা ছাড়ছে হাজারো মানুষ, কিন্তু কেন?
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য কানাডা উন্নত জীবনযাত্রা, নিরাপত্তা, মানসম্মত শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগের জন্য প্রতিবছর বহু মানুষ দেশটিতে অভিবাসনের স্বপ্ন দেখে। তবে ২০২৫ সালের শুরুতেই পাল্টে যাচ্ছে সেই চিত্র। বিপুল সংখ্যক নাগরিক ও অভিবাসী কানাডা ছাড়ছেন, যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা স্ট্যাটিসটিকস কানাডার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে ২৭ হাজার ৮৬ জন কানাডীয় নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দা দেশ ত্যাগ করেছেন। এটি ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ, যা ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩ শতাংশ বেশি।

বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, সাধারণত বছরের তৃতীয় প্রান্তিক জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর এ সবচেয়ে বেশি দেশত্যাগ ঘটে। তাই চলতি বছরের শেষ নাগাদ পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একই সময়ের মধ্যে কানাডায় ফিরে এসেছেন ৯ হাজার ৬৭৬ জন প্রবাসী, তবে এ সংখ্যা প্রত্যাবর্তনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

অস্থায়ী বাসিন্দারাও ছাড়ছেন কানাডা

অস্থায়ী বাসিন্দাদের মধ্যেও দেশত্যাগের হার বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে কানাডা ছেড়েছেন প্রায় ২ লাখ ৯ হাজার ৪০০ জন অস্থায়ী বাসিন্দা, যাদের মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও ওয়ার্ক পারমিটধারীরা। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা ৫৪ শতাংশ বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি বছরের মে মাসে নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনির ‘অস্থায়ী বিদেশি শ্রমিক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানো’–সংক্রান্ত ঘোষণার পর এ প্রবণতা আরও তীব্র হতে পারে।

কেন মানুষ ফিরে যাচ্ছেন?

স্ট্যাটিসটিকস কানাডার আগের গবেষণায় দেখা গেছে, অভিবাসীরা সাধারণত কানাডায় আসার তিন থেকে সাত বছরের মধ্যে দেশত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। যাদের পরিবার নেই বা যাঁরা ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে, তাদের মধ্যে এ প্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

উচ্চশিক্ষিত পেশাজীবী, উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সাররা অনেকেই যুক্তরাষ্ট্র, পর্তুগাল, ইতালি, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও মেক্সিকোর মতো দেশে চলে যাচ্ছেন, যেখানে জীবনযাত্রার ব্যয় কম, আবহাওয়া অনুকূল এবং ডিজিটাল নোম্যাড ভিসার সুবিধা রয়েছে।

ভবিষ্যতের শঙ্কা
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই দেশত্যাগ ভবিষ্যতে কানাডার অর্থনীতি, শ্রমবাজার ও শিক্ষাব্যবস্থার ওপর দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অভিবাসী-নির্ভর কানাডার জন্য দক্ষ জনবল ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী শুধু মানবসম্পদ নয়, তারা দেশের উদ্ভাবন, কর রাজস্ব ও সামাজিক স্থিতিশীলতার অন্যতম ভিত্তি। তাদের চলে যাওয়া মানে এসব খাতেই বড় ক্ষতির আশঙ্কা।