বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫

|২০ শ্রাবণ ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৩০, ৪ আগস্ট ২০২৫

‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্রের জবানবন্দি

‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্রের জবানবন্দি
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ দ্বিতীয় সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ আল ইমরান।

সোমবার (৪ আগস্ট) দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকায় পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হন। এরপর তাকে আগারগাঁওয়ের জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখোমুখি হন।

আবদুল্লাহ আল ইমরান জানান, গত বছরের ২৬ অথবা ২৭ জুলাই সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে শেখ হাসিনা পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। তখন তিনি সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলেন এবং নিজেকে আন্দোলনকারী হিসেবে পরিচয় দিলে শেখ হাসিনা হাসপাতালের হেল্পডেস্কে গিয়ে “নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ” বলে নির্দেশ দেন।

ইমরান বলেন, “শেখ হাসিনা প্রথমে আমাকে ‘আপা’ বলে ডাকতে বলেন। এরপর আমার পড়াশোনা, হলবাস, আন্দোলনে সম্পৃক্ততা ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চান। আমি বলি, আমাকে পুলিশ সরাসরি গুলি করেছে। তখন তিনি চলে যাওয়ার সময় হাসপাতালের কর্মীদের উদ্দেশে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ আদেশ দেন, যা আমি নিজের কানে শুনি।”

তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর তাকে সময়মতো অস্ত্রোপচার দেওয়া হয়নি, ওষুধ কিনতে দেওয়া হয়নি, এমনকি তার বাবাও তাকে হাসপাতাল থেকে নিতে পারেননি। পরবর্তীতে তার আহত পা কেটে কারাগারে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এতে তিনি ওই আদেশের পরিণতি উপলব্ধি করতে সক্ষম হন।

এই ঘটনার জন্য ইমরান স্পষ্টভাবে দায়ী করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে।

এর আগে, গত রোববার মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মাইক্রোবাসচালক খোকন চন্দ্র বর্মণ।

এক বছর আগে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতা, গুম, নির্যাতন ও হত্যা–সম্পর্কিত অভিযোগে দায়ের হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিক বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ইতোমধ্যে সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে।

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ