রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

|১০ কার্তিক ১৪৩২

শীর্ষ সংবাদ:

জনপ্রশাসনের সর্বত্র গুন্ডামি স্টাইলে চলছে: হাসনাত
এক এনআইডিতে সর্বোচ্চ ৭টি সিম রেজিস্ট্রেশন করা যাবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফার্মগেটে মেট্রো রেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে পথচারীর মৃত্যু, ট্রেন চলাচল বন্ধ
ফেব্রুয়ারি নয়, জানুয়ারিতেই নির্বাচন চায় গণঅধিকার পরিষদ
দলগুলো যাই বলুক, নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বিস্ফোরণে দগ্ধ ছয়
মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি, টেকনাফে নারী গুলিবিদ্ধ
আরপিও সংশোধনীতে বিএনপির আপত্তি, পর্যবেক্ষণ করবে ইসি
সাগরে নিম্নচাপ, পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে, নাম হবে মন্থা
লন্ডনে বর্ণবাদী ডানপন্থীদের রুখতে সড়কে হাজার হাজার প্রতিবাদী মানুষ
সরকার দ্রুত সাংবাদিক সুরক্ষা আইন করবে: তথ্য উপদেষ্টা
নভেম্বরে সপরিবারে ওমরাহ করতে যাচ্ছেন তারেক রহমান

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ১৯:২৯, ২৬ অক্টোবর ২০২৫

শৈশবে বাবা-মা হারানো আবুল কালামের এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না কেউ

শৈশবে বাবা-মা হারানো আবুল কালামের এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না কেউ
ছবি: সংগৃহীত ও সদ্য সংবাদ সম্পাদিত

রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের একটি পিলারের বিয়ারিং প্যাড খুলে পরে তার নিচে চাপা পড়ে আবুল কালাম (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। রোববার দুপুর প্রায় ১২.৩০টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়রা জানান। পরে সংবাদপত্রের শাড় হতে পরিবারের সদস্যরা মৃত্যুর খবর পান।

নিহত আবুল কালামের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে। গ্রামের লোকজন ও আত্মীয়স্বজন তার আকস্মিক চলে যাওয়ায় টিম ধরে পড়েছেন। তারা বলেন, কিশোর বয়সেই বাবা-মা হারিয়ে ছিলেন আবুল কালাম; বড় ভাই-বোনের পরিবারে বেড়ে ওঠা তিনি পরিশ্রম করে পরিবারের জীবনযাত্রা ঠিক রাখতে চেয়েছিলেন।

ঈশ্বরকাঠি গ্রামের অনেকে জানান, জলিল চোকদার ও হনুফা বেগমের ছেলে আবুল কালাম চার ভাই ও ছয় বোনের মধ্যে সবার সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন। প্রায় ২০ বছর আগে তার বাবা-মা মারা যান; এরপর থেকেই তিনি বড় ভাই-বোনের সহায়তায় বেড়ে ওঠেন।

তার শৈশবের বন্ধু রিহিনুজ্জামান বলেন, ‘এক মাস আগে গ্রামের বাড়িতে এসে দেখা হয়েছিল; সে ছিল সব সময় হাসিখুশি আজ সেই হাস্যোজ্জ্বল বন্ধু নেই, বিশ্বাস করা কঠিন।’

জীবিকা নির্বাহের জন্য ২০১২ সালে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন আবুল কালাম। দেশে ফেরার পর ২০১৮ সালে পাশের গ্রামের আইরিন আক্তারের সঙ্গে বিয়ে করেন। স্ত্রী ও দুই সন্তানের সংসারে তারা ছিলেন; এক ছেলে (৬) ও এক মেয়ে (৪) রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের পাঠানটুলী এলাকায় তাঁর পরিবার বাস করত এবং তিনি ঢাকার মতিঝিলের একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কর্মরত ছিলেন। প্রতিদিনই নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা যাতায়াত করতেন তিনি।

প্রতিদিনের মতো রোববার সকালেই নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসেন আবুল কালাম। পরের মুহূর্তে তিনি কাজে যাওয়ার সময় ফার্মগেটে মেট্রোরেলের পিলারের বিয়ারিং প্যাড পড়ে তার ওপর চাপা পড়ে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তিনি মারা যান স্থানীয়রা এভাবে ঘটনা বর্ণনা করেছেন। পরে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রচার হলে পরিবারে শোকে ভাঙন পড়ে এবং অনেকে ঢাকায় ছুটে যান।

ঘটনার পরে ঈশ্বরকাঠি গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে গ্রামের চারটে টিনের ঘরের মধ্যে আবুল কালামের থাকা ঘরটি এখন তালাবদ্ধ রাখা হয়েছে। বড় বোন সেলিনা বেগম ছবি হাতে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ভাই সারাজীবন কষ্ট করে মরেছ; এখন দুই শিশুকে রেখে সে আর নেই এদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা চিন্তিত।’

বড় ভাই খোকন চোকদার বলেন, ‘গত মাসে সে গ্রামে এসে জমিজমা সম্পর্কিত কাজ করছিল, তারপর ঢাকায় ফিরে গিয়েছিল কথায় ছিল আবার ফিরবে। কল্পনাও করিনি এটি হবে শেষসফর।’ তিনি শোক প্রকাশ করে জিজ্ঞাসা করেন, কেন এমন অকস্মিক দুর্ভাগ্য তাদের পরিবারের সঙ্গে ঘটল।

স্থানীয়রা ও পরিবারের লোকজন ভবিষ্যতে পুনরায় এমন দুর্ঘটনা এড়াতে কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন। নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের বিষয় ও শেষকৃত্যের প্রস্তুতি নিয়ে পরিবারের সদস্যরা কাজ করছে। সূত্র: প্রথম আলো

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ