জুলাই জাতীয় সনদের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হলো: প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেনপ্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ও সমৃদ্ধির পথে জাতিকে এগিয়ে নেবে এবং গত ১৬ বছরের নৃশংসতার অবসান ঘটাবে।
 
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, 'আজ আমাদের নতুন জন্মের দিন। এই স্বাক্ষরের মধ্য দিয়েই আমরা নতুন বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করছি। এখন আমাদের জাতীয় জীবনে পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের সংবিধান ও সরকার পরিচালনার পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে।'

তরুণরাই আমাদের পথ দেখাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'দেশটি তরুণদের। ১৮ কোটি জনসংখ্যার অর্ধেকই ২৭ বছরের নিচে। রুণরা এই পরিবর্তনের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছে, তারাই নতুন করে দেশকে গড়ে তুলবে।'

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'জুলাই জাতীয় সনদ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্যও এক উদাহরণ স্থাপন করেছে।'

তিনি বলেন, 'অনেক দেশ আমাদের কাছে জানতে আসবে কিভাবে আমরা গোটা জাতিকে সম্পৃক্ত করে জুলাই সনদ স্বাক্ষর সম্ভব করেছি।'

অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, কমিশনের সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা একযোগে সনদে স্বাক্ষর করেন।

২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ, আহত ও বীরদের স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আজ আমরা সেই সাহসী বীরদের, শহীদ ও আহতদের স্মরণ করছি এবং তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। তাঁদের অবদানের কারণেই আমরা আজকের এই সুযোগ পেয়েছি। আমরা এবং সমগ্র জাতি তাঁদের প্রতি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'ৎজুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরের মাধ্যমে জাতি নৃশংসতা থেকে সভ্যতায় ফিরে এসেছে, যেখানে আগে আইনের শাসন ছিল না, মানুষ যা ইচ্ছা তাই করতে পারত। এখন আমরা সভ্যতার পথে পা বাড়িয়েছি। আমরা এমন এক সভ্যতা গড়ে তুলব, যা দেখে বিশ্ববাসী ঈর্ষান্বিত হবে। তবে সেটি নির্ভর করবে জুলাই সনদ-পরবর্তী সময়ে আমাদের কর্মের ওপর।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল—যদি আমরা সমাজকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারি।’

জুলাই জাতীয় সনদকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ঐক্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি আমরা সনদের মতো অন্য বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারি, তাহলে আমাদের দেশ একটি অনন্য রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আমাদের সেই শক্তি রয়েছে।’

দেশের সম্পদ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশেরই অংশ এবং এটি সম্পদে পরিপূর্ণ হলেও এখনও অব্যবহৃত রয়েছে।

তিনি বলেন, 'সনদ দেশের ভেতরে শৃঙ্খলা এনেছে। তাই ঐক্য বজায় রেখে এবং শৃঙ্খলার মাধ্যমে দেশ পরিচালনা করলেই জাতীয় সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।'

প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, সকল মতভেদ ভুলে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সনদের যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই পরিবর্তন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

সদ্য সংবাদ/এমটি