বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

|৭ কার্তিক ১৪৩২

সদ্য সংবাদ অনলাইন

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১১:০১, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব ড. ইউনূসের

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব ড. ইউনূসের
ছবি: সংগৃহীত

রোমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামের সাইডলাইনে আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (আইএফএডি) প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিওর সঙ্গে বৈঠকে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা, নারী, কৃষক ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকারীদের সহায়তায় একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রবিবার (১২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠন করা গেলে তা দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা এবং তরুণ, কৃষক, নারী ও মৎস্যজীবীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।'

বৈঠকে দুই নেতা বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য খাতে বিভিন্ন কৌশলগত বিষয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার মূল বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ শিল্পের সম্ভাবনা, আম ও কাঁঠালের রপ্তানি সম্প্রসারণ, জলবায়ু সহনশীল কৃষি উদ্যোগ বিকাশ এবং মহিষের দুধ থেকে মোজারেলা চিজ উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা।

অধ্যাপক ইউনূস আইএফএডি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং কৃষি, সামাজিক ব্যবসা ও প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা জোরদারে একটি বিশেষজ্ঞ টিম পাঠানোর প্রস্তাব দেন। 

প্রস্তাবের জবাবে আইএফএডি প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিও জানান, সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগে অংশ নিতে এবং বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বাড়াতে আগ্রহী তারা।

লারিও আরও জানান, বর্তমানে আইএফএডি বাংলাদেশে অর্ধ ডজনেরও বেশি কৃষি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে সংস্থাটি মোট ৩৭টি প্রকল্পে অংশীদার হয়েছে, যার মোট মূল্য ৪ দশমিক ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ১ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার সরাসরি আইএফএডির অর্থায়ন। বর্তমানে ৪১২ মিলিয়ন ডলারের ছয়টি প্রকল্প চলমান রয়েছে, আরেকটি অনুমোদনের অপেক্ষায়।

বাংলাদেশের কৃষি রপ্তানি প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, 'আমরা ইতোমধ্যে আম রপ্তানি শুরু করেছি, তবে পরিমাণ এখনও সীমিত। চীন বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ আম ও কাঁঠাল আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'বিনিয়োগ ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে বাংলাদেশের জেলেরা এখনো অগভীর পানিতেই মাছ ধরেন। গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে আইএফএডি অর্থায়ন ও প্রযুক্তি সহযোগিতার মাধ্যমে সহায়তা দিতে পারে।'

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, এসডিজি সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং আইএফএডির সহযোগী সহ-সভাপতি ডোনাল ব্রাউন।

ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামে অংশ নিতে অধ্যাপক ইউনূস বিকেল ৫টার দিকে রোমে পৌঁছান। তিনি অনুষ্ঠানে একটি মূল বক্তৃতা দেবেন এবং বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের অতিথিদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।

সদ্য সংবাদ/এমটি

সর্বশেষ