ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে খুনের ভিডিও ভাইরাল, আটক ৩

নারায়ণগঞ্জের খানপুরে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নিরাপত্তাকর্মী আবু হানিফ (৩০) হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) পৃথক অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার সায়েস্তারা গ্রামের ফরচান মিয়ার ছেলে বাহার (৩৬) ও তাঁর ভাই সাইদুল ইসলাম (২৫), এবং নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রোহল এলাকার শফিকুর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান জিতু (২৯)।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে বাকি আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৬৫ সেকেন্ডের ওই ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক খোলা জায়গায় হানিফকে মাটিতে ফেলে ইট দিয়ে বারবার আঘাত করছেন। প্রায় পাঁচ থেকে সাতজনের দলটি তাঁকে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে হানিফকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে শহরের খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে নির্যাতন করা হয়। সন্ধ্যায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় তাঁকে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত আবু হানিফ স্থানীয় একটি বাড়ির নৈশপ্রহরী ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের শরণখোলায়। স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে তাঁর।
নিহতের বোন রাবেয়া বলেন, “দুপুরে ভাই ঘুমাচ্ছিলেন। কয়েকজন এসে টানাহেঁচড়া করে নিয়ে যায়। আমরা বাধা দিলেও কেউ শোনেনি। পরে জানতে পারি, তারা ভাইয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলেছে। কিন্তু কবে, কার সঙ্গে কিছুই আমরা জানি না।”
হানিফের ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম জানান, “আমি তখন ডিউটিতে ছিলাম। খবর পেয়ে বাসায় ফিরে দেখি কিছু যুবক হানিফকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে গিয়ে দেখি, ওকে মাটিতে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে স্থানীয় অভি নামে এক ছেলেকে চিনেছি। পরে সন্ধ্যায় খবর পাই, হানিফকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে কিন্তু ততক্ষণে সে আর বেঁচে নেই।”
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন এবং পলাতক আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।