বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

|৬ কার্তিক ১৪৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:৫২, ২১ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ১১:০৪, ২১ অক্টোবর ২০২৫

নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত ঋণের অর্থ ছাড়বে না আইএমএফ

নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত ঋণের অর্থ ছাড়বে না আইএমএফ
ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচিত সরকার গঠনের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি দেবে না আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি জানিয়েছে, নতুন সরকারের সঙ্গে আলোচনার পরই কিস্তির অর্থ ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আইএমএফ-এর এই ষষ্ঠ কিস্তিতে প্রায় ৮০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা ছিল। তবে চলমান সংস্কার কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা ও নতুন সরকারের নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট না হওয়ায় সংস্থাটি আপাতত অর্থ ছাড়ে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে।

সম্প্রতি ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভার ফাঁকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে এক বৈঠকে এই বার্তা জানায় আইএমএফ। 

গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, 'রিজার্ভ পরিস্থিতি ভালো, ডলার স্থিতিশীল। আইএমএফ-এর নীতিসহায়তা গুরুত্বপূর্ণ হলেও তাদের অর্থ ছাড়া দেশ চলবে।'

তিনি আরও জানান, চলতি ডিসেম্বরেই কিস্তি ছাড়ের কথা থাকলেও নির্বাচন-পূর্ব সময়ে আইএমএফ তা দিতে রাজি নয়।

অর্থনীতি উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'আইএমএফ যদি কঠোর শর্ত আরোপ করে, বাংলাদেশ তা মানবে না। এখন দেশ আগের মতো সংকটে নেই।'

এর আগেও ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় একই অবস্থান নিয়েছিল আইএমএফ। ২০২২ সালে জ্বালানি ও মুদ্রানীতিতে কঠোর শর্ত আরোপ করে সরকারকে তেল-গ্যাসের দাম বাড়াতে বাধ্য করেছিল সংস্থাটি। এর ফলে মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়ে।

এদিকে, ঋণের ষষ্ঠ কিস্তির শর্ত পর্যালোচনায় আগামী ২৯ অক্টোবর ঢাকায় আসছে আইএমএফ-এর একটি প্রতিনিধিদল। দুই সপ্তাহ তারা সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে এবং ফিরে গিয়ে মূল্যায়ন প্রতিবেদন দাখিল করবে। কিস্তি ছাড়ের সিদ্ধান্তে এই প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩২.১৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, পাশাপাশি আমদানি ব্যয়ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের সময় আইএমএফ-এর কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের সহায়তা চেয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে অনুমোদিত এই ঋণ পরবর্তীতে ৫৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। এর মধ্যে পাঁচ কিস্তিতে ইতোমধ্যে ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।

চলতি কিস্তি পাওয়া নির্ভর করছে—নির্বাচনের পর নতুন সরকারের সঙ্গে আইএমএফের আলোচনার ফলাফলের ওপর।

সদ্য সংবাদ/এমটি

সর্বশেষ