প্রশাসনকে নিষ্ক্রিয় রেখে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করছে সরকার: যুবদল সভাপতি

সরকার পরিকল্পিতভাবে প্রশাসনকে নিষ্ক্রিয় রেখে দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। তিনি বলেন, এই অরাজকতা সৃষ্টি করে সরকার জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়।
শনিবার (১২ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে মোনায়েম মুন্না বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলেও প্রশাসন ও সরকার তা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে। এমন ব্যর্থতার সুযোগে একটি বিশেষ গোষ্ঠী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপি এবং তার অঙ্গ সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য ও কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি জানান, সরকার ও প্রশাসনের কাছে দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তারের আহ্বান জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং সরকারের একটি অংশ এদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে, যার ফলে অপরাধ দমন কার্যত থমকে গেছে।
যুবদল সভাপতি দাবি করেন, একটি গোষ্ঠী নির্বাচনমুখী গণতান্ত্রিক উত্তরণের বিপরীতে কাজ করছে এবং বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার উসকানি দিচ্ছে। এতে করে দেশে সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপের কথা উল্লেখ করে মুন্না বলেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পরিচালিত জরিপে বিএনপির প্রতি আস্থার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয়েছে, দেশের অধিকাংশ তরুণ বিএনপিকেই ভবিষ্যতের নেতৃত্বে দেখতে চায়। এই ফলাফল প্রকাশের পরই একটি গুপ্ত সংগঠন এবং তাদের ইন্ধনে পরিচালিত একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা আতঙ্কিত হয়ে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
চকবাজারে যুবদল কর্মী মইনের হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পাথর দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে মইনকে। এটি মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। এ ঘটনায় সরাসরি জড়িতদের সিসিটিভি ফুটেজে চিহ্নিত করা হলেও মামলায় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের এমন আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ।’
তিনি জানান, সংগঠনের নীতিমালা অনুযায়ী যেসব যুবদল ও ছাত্রদল কর্মীর নাম এই ঘটনায় এসেছে, তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে, তারা মামলার বাইরে রয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় এক বছরেও দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। খুলনায় গুলি ও রগ কেটে যুবদলের এক বহিষ্কৃত নেতাকে হত্যা, চাঁদপুরে খুতবার সময় ইমামের ওপর হামলা, কুমিল্লায় একই পরিবারের তিনজনকে নৃশংসভাবে হত্যা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল ও ছাত্রদল নেতা সাম্য, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পারভেজ হত্যাকাণ্ড—সব মিলিয়ে পুরো দেশজুড়ে এক উদ্বেগজনক চিত্র দেখা যাচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দেশের জনগণকে অনুরোধ করছি, আপনারা সতর্ক থাকুন। কেউ যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিকে কাজে লাগিয়ে দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।’